মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি॥ পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক (সহকারী) সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক মো. কামরুল ইসলাম উপজেলার ৪৪নং চাঁদকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
ওই শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ভুক্তভোগীরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক কামরুল ইসলাম চাকরি দেয়া, শিক্ষক বদলি, শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পাইয়ে দেয়াসহ জমি দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়া প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় হিন্দুদের জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
স্থানীয় শিক্ষার্থী অভিভাবক মাসুদ বাহাদুর জানান, ওই শিক্ষক প্রকাশ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের সাথে অনৈতিক আচরণ করেন। আর ওই অনৈতিক আচরণের কারণে অনেক শিক্ষার্থী অভিভাবকরা তাদের শিক্ষার্থীদের অন্যত্র নিয়ে গেছেন।
উপজেলার গাওখালীর কমল মণ্ডল জানান, তার স্ত্রী রিংকু মণ্ডল উপজেলার দয়াল চাঁদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিক। তাকে বদলির জন্য ওই শিক্ষক নেতাকে ৪০ হাজার টাকা দেন। কিন্তু বদলি না করিয়ে দিয়ে টাকাও ফেরত দেননি।
উপজেলার দীর্ঘা ইউনিয়নের জিলবুনিয়া গ্রামের সুশান্ত মিস্ত্রি জানান, ‘আমাকে জমি দেয়ার কথা বলে শিক্ষক নেতা কামরুল আমার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন। তার কথা মতো ওই জমিতে ঘর তুলতে বালু ভরাট করি। কিন্তু তিনি এখন জমির কবলা দলিল করিয়ে দিচ্ছেন না।
স্থানীয় মনির হাওলাদার জানান, আমার ছেলে আবু বক্করকে প্রাথমিক বৃত্তি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে ওই শিক্ষক ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন। ছেলে বৃত্তি না পাইলে অনেক চাওয়ার পর ৪ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন।
এছাড়া বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির টাওয়ারে চাকরি দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে টাকা নেয়া, শিক্ষিকাদের সাথে অনৈতিক সম্পর্কসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আর এসব অভিযোগের তদন্ত চলছে।
তার বিরুদ্ধে আনিত একটি অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. মাহাবুবুর রহমান জানান, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত একটি অভিযোগের তদন্তের দায়িত্বের ভার অফিস আমাকে দেন। গত বুধবার ওই তদন্তে উপজেলার চাঁদকাঠীতে গেলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা মিলে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান মাস্টার অমূল্য রঞ্জন হালদার জানান, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই সব অভিযোগের কিছু তদন্তাধীন রয়েছে।
এসব অভিযোগের বিষয় তার সাথে কথা হলে তিনি একটি বদলির জন্য টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে জানান, তা ফেরত দিয়েছি। অন্য অভিযোগগুলো মিথ্যা।
Leave a Reply